Processing math: 100%

Ad beside title

দ্রবণ- Solution

 দ্রবণ- Solution

দ্রবণ সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি পড়েছি। দ্রবণের অনেক উদাহরণ আমাদের চারপাশেই রয়েছে। যেমনঃ চিনির সরবত। দ্রবণ নিয়ে বিস্তারিত পড়ার পূর্বে আমরা দ্রবণ সম্পর্কীত কিছু তথ্য জেনে নেইঃ

দ্রাবকঃ যে  তরল পদার্থ দ্রব্য কে দ্রবীভূত করে তাকে দ্রাবক বলে। যেমনঃ পানি, ইথানল, বেনজিন ইত্যাদি।

দ্রব্যঃ যে পদার্থ দ্রাবকে দ্রবীভূত হয় তাকে দ্রব্য বলে। যেমনঃ লবন, চিনি,বেকিং সোডা ইত্যাদি।

দ্রবণঃ  দ্রাবক এবং দ্রব্যের মিশ্রণ কে দ্রবণ বলে। দ্রবণ প্রধানত ২ প্রকারঃ

১.সমসত্ত্ব দ্রবণঃ স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমান দ্রাবক যে পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে সক্ষম ঠিক সেই পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে যে দ্রবণ তৈরী করে তাকে সমসত্ত্ব দ্রবণ বলে।

২. অসমসত্ত্ব দ্রবণঃ  স্থির তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট পরিমান দ্রাবক যে পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে সক্ষম তার চেয়ে কম পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে যে দ্রবণ তৈরী করে তাকে অসমসত্ত্ব দ্রবণ বলে। অর্থাৎ, সমসত্ত্ব দ্রবণ প্রস্তুত করতে যে পরিমান দ্রব্য প্রয়োজন তার চেয়ে কম দ্রব্য দ্বারা দ্রবণ প্রস্তুত করলে তাকে অসমসত্ত্ব দ্রবণ বলে।

Solution
Image source-Google|| Image by- Heinrich van den Berg/Getty Images



দ্রাব্যতাঃ প্রতি ১০০ গ্রাম দ্রাবকে পরিমান দ্রব্য দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরী করে তাকে ঐ দ্রব্যের দ্রাবতা বা Solubility বলে। একে S দ্বারা প্রকাশ করা হয়। M  ভরের কোন দ্রবণে যদি দ্রব্যের ভর m হয় তাহলে,দ্রাবকের ভর =   দ্রবণের ভর - দ্রব্যের ভর = M-m

অতএব, দ্রাব্যতা S=100×mM-m ----------(1)

দ্রাব্যতার প্রভাবকঃ 
১.তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে দ্রাবকের আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং ঘনত্ব হ্রাস পায়, ফলে দ্রবক অধিক পরিমান দ্রব্যকে দ্রবীভূত করতে পারে। অর্থাৎ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে দ্রাব্যতা বৃদ্ধি পায়।তবে তাপোৎপাদী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে তাপ বৃদ্ধিতে দ্রাব্যতা হ্রাস পায়।

২.দ্রব্য কঠিন বা তরল হলে এর দ্রাব্যতার উপর চাপের তেমন কোন প্রভাব নেই। তবে গ্যাসীয় দ্রব্যের ক্ষেত্রের চাপের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। এ সম্পর্কে বিজ্ঞানী হেনরি একটি সুত্র প্রদান করেন।সূত্রটি নিম্নরূপঃ
 তরল দ্রাবকে বিক্রিয়া বিহীন গ্যাসীয় দ্রব্যের দ্রাব্যতা এর উপর প্রযুক্ত চাপের সমানুপাতিক। 
অর্থাৎ, চাপ বৃদ্ধি করলে অধিক পরিমান গ্যাস তরলে দ্রবীভূত হয়।
দ্রাব্যতা S এবং চাপ P হলে, SproP
                                            S=kP  --------- (2)
এখানে k হেনরির ধ্রুবক।

জ্ঞান মূলক প্রশ্নঃ " 25oC তাপমাত্রায় NaCl  এর দ্রাব্যতা 36" -- ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ 25oC তাপমাত্রায় NaCl  এর দ্রাব্যতা 36" বলতে বোঝায় যে, 25oC তাপমাত্রায় 36 গ্রাম NaCl  লবন দ্রবীভূত হয়ে NaCl এর সম্পৃক্ত দ্রবণ প্রস্তুত করবে। অন্যভাবে বললে, 25oC তাপমাত্রায় 100 গ্রাম পানি 36 গ্রাম NaCl  কে দ্রবিভূত করতে পারে।

গানিতিক উদাহরণঃ

১. 250g কোন দ্রবণের দ্রাব্যতা 25oC তাপমাত্রায়  28  এবং 45oC তাপমাত্রায় 37 । দ্রবণটি কে উচ্চ তাপমাত্রা হতে নিম্ন তাপমাত্রায় নিয়ে আসলে কি পরিমান দ্রব্য কেলাসিত হবে?

সমাধানঃ
45oC তাপমাত্রায়,
                                দ্রাব্যতা S1=37
                               দ্রবণের ভর M=250g
                                দ্রব্যের ভর m1=?
আমরা জানি,
                    S1=100×m1M-m1
                37=100×m1250-m1
                100m1=9250-37m1
                100m1+37m1=9250
                137m1=9250
                m1=9250137
                                    m1=67.518g


আবার 25oC তাপমাত্রায়,
                                দ্রাব্যতা S2=28
                               দ্রবণের ভর M=250g
                                দ্রব্যের ভর m2=?
আমরা জানি,
                    S2=100×m2M-m2
                28=100×m2250-m2
                100m2=7000-28m2
                100m2+28m2=7000
                128m2=7000
                m2=7000128
                m2=54.688g

সুতরাং, কেলাস পাওয়া যাবে =m1-m2
                                               = (67.518-54.688)g
                                               =12.83g      Ans.


ব্যাতিক্রমঃ  উপরের প্রশ্নে দ্রবণ, দ্রাবক এবং দ্রব্য কে গ্রাম এককে প্রকাশ করা হয়েছে। তাই দ্রবণের ভর থেকে দ্রব্যের ভর বাদ দিয়ে আমরা দ্রাবকের ভর পেয়ে গিয়েছি। এক্ষত্রে দ্রাবতার কোন একক নেই, কেননা, দ্রাবক,দ্রবণ এবং দ্রব্য উভয়কেই গ্রামে প্রকাশ করা হয়েছে। 
তবে,যদি দ্রবন  কে লিটার( L) এককে এবং দ্রবকে গ্রাম(g) এককে প্রকাশ করা হয় তাহলে দ্রাব্যতার একক হবে gL-1 । এক্ষেত্রে দ্রবণের ভর থেকে দ্রবের ভর বিয়োগ করা যাবেনা। কেননা দ্রবণ লিটার এককে এবং দ্রব্য গ্রাম এককে আছে। অর্থাৎ, উপরের সূত্রের দ্রাবকে ভর = M-m  আর প্রয়োগ করা যাবেনা।
এক্ষেত্রে দ্রাব্যতা S= গ্রাম এককে দ্রব্যের ভর ÷ লিটার এককে দ্রবণের আয়তন
এখন দ্রব্যের ভর m গ্রাম এবং দ্রবণের আয়তন V লিটার হলে,
 দ্রাব্যতা S=mV ----------(3)

আবার, দ্রবণ কে লিটারে এবং দ্রব্যকে মোল (mol)  এ প্রকাশ করলে দ্রাব্যতার একক হবে molL-1 । এক্ষেত্রে  দ্রাব্যতা S= মোল এককে দ্রব্যের ভর ÷ লিটার এককে দ্রবণের আয়তন
এখন V আয়তনের দ্রবণে n মোল দ্রব্য দ্রবীভূত থাকলে,
দ্রাব্যতা S=nV ----------(4)

গাণিতিক উদাহরণঃ

২. পানিতে একটি লবনের দ্রাব্যতা 20oC তাপমাত্রায় 270gL-1 এবং 40oC তাপমাত্রায় 360gL-1 । এরূপ 200g সম্পৃক্ত দ্রবণ  কে 40oC হতে 20oC তাপমাত্রায় শীতল করা হলে কেলাসের ভর নির্ণয় কর।

সমাধানঃ 
এখানে,40oC তাপমাত্রায়
            দ্রবণের ভর = 200g
            অতএব দ্রবণের আয়তন V=(200×1)mL 
                                                           =200mL=2001000=0.2L
            দ্রাব্যতা S1=360gL-1
            দ্রব্যের ভর m1=?

*[ পানির আপেক্ষিক গুরুত্ব 1  এবং আয়তন = ভর × আপেক্ষিক গুরুত্ব ]

আমরা জানি,
                    দ্রাব্যতা S1=m1v
                        360=m10.2
                        m1=72g

আবার,20oC তাপমাত্রায়
            দ্রবণের ভর = 200g
            অতএব দ্রবণের আয়তন V=(200×1)mL 
                                                           =200mL=2001000=0.2L
            দ্রাব্যতা S2=270gL-1
            দ্রব্যের ভর m2=?

আমরা জানি,
                    দ্রাব্যতা S2=m2v
                        270=m20.2
                        m2=54g
সুতরাং, কেলাসের ভর =m1-m2=72-54=18g Ans.


মোলারিটি ও মোলার দ্রবণঃ নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ১ লিটার দ্রবণে দ্রবীভূত দ্রবের মোল সংখ্যা কে ঐ দ্রবণের মোলারিটি বলে। মোলারিটি কে দ্রব্যের ঘনমাত্রা  ও বলা হয়। V লিটার আয়তনের দ্রবনে n মোল দ্রব্য দ্রবীভূত থাকলে, 
মোলারিটি S=nV
                 S=WMV [W=দ্রব্যের ভর, M= আণবিক ভর]
                 S=WM×V ------------(5)
এখানে দ্রবণের আয়তন লিটার এককে প্রকাশ হয়েছে। যদি দ্রবণের আয়তন মিলিলিটার I(mL) এ দেয়া থাকে তাহলে এই সূত্রের পরিবর্তীত রূপ হবে, 
S=1000×WM×V ------------(6)

*[মোল সংখ্যা = ভর ÷ আণবিক ভর ]
মোলার দ্রবণঃ ১ লিটার কোন দ্রবণে ১মোল দ্রব্য দ্রবীভূত থাকলে ঐ দ্রবণ কে মোলার দ্রবণ বলে।তখন এর ঘণমাত্রাকে লেখা হয় 1 M ।

ডেসিমোলার দ্রবণঃ ১ লিটার কোন দ্রবণে ০.১মোল(১ মোলের ১০ ভাগের ১ ভাগ) দ্রব্য দ্রবীভূত থাকলে  ঐ দ্রবণ কে ডেসিমোলার দ্রবণ বলে। তখন এর ঘণমাত্রাকে লেখা হয় 0.1 M ।

সেমিমোলার দ্রবণঃ ১ লিটার কোন দ্রবণে ০.৫মোল (১ মোলের অর্ধেক) দ্রব্য দ্রবীভূত থাকলে  ঐ দ্রবণ কে সেমিমোলার দ্রবণ বলে। তখন এর ঘণমাত্রাকে লেখা হয় 0.5 M ।

গাণিতিক উদাহরণঃ 
৩. NaCl এর 600mL ডেসিমোলার দ্রবণে NaCl এর ভর নির্ণয় কর।

সমাধানঃ এখানে,
                              ঘনমাত্রা S=0.1M [ডেসিমোলার দ্রবণ]
                              আয়তন V=600mL
                              NaCl এর আণবিক ভর M=23+35.5=58.5
                              NaCl এর ভর m=?
আমরা জানি, 
                        S=1000×WM×V
                       1000×W=SMV
                       W=SMV1000
                       W=0.1×58.5×6001000
                       W=3.51g    Ans.



No comments

If you have any questions, feel free to ask here. I will try to answer your questions.