পলির বর্জন নীতি-আউফবাউ নীতি ও হুন্ডের নিয়ম( Pauli's-exclusion-principal, Aufbau principal and Hund's rule)
পলির বর্জন নীতি-আউফবাউ
নীতি ও হুন্ডের নিয়ম
পলির বর্জন নীতিঃ পরমাণুতে ইলেকট্রনের অবস্থান ও কোয়ান্টাম সংখ্যা নিয়ে বিজ্ঞানী ডব্লিউ পলি(Wolfgang Pauli)একটি নীতি প্রণয়ন করেন যা পলির নীতি নামে পরিচিত। পলির নীতি অনুসারেঃ
“একটি পরমাণুর যে
কোন দুটি ইলেক্ট্রনের ৪ টি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান সমান হতে পারেনা”
অর্থাৎ, কোন পরমাণুর যেকোন দুটি ইলেক্ট্রনের
৪টি ইলেক্ট্রন সংখ্যার অন্তত একটি ভিন্ন হবেই।
Wolfgang Pauli Image source-Google| Image by-brainpickings |
উদাহরণ স্বরূপ কার্বনের (c) ইলেক্ট্রন বিন্যাস দেখা যাক।
এখানে, ৩য় ও ৪র্থ ইলেক্ট্রন 2s
অরবিটালে
অবস্থিত।
৩য় ইলেক্ট্রনের জন্য,
n= 2 (ইলেক্ট্রন টি ২য় কক্ষপথে অবস্থিত)
l= 0 (s অরবিটালের জন্য l=0)
m=
0 (আমরা
জানি, m= ±l, যেহেতু l=o তাই m=0)
s=
+1/2 (অরবিটালের
১ম ইলেক্ট্রনের জন্য s= +1/2)
৪র্থ ইলেক্ট্রনের জন্য,
n= 2 (ইলেক্ট্রন টি ২য় কক্ষপথে অবস্থিত)
l= 0 (s অরবিটালের জন্য l=0)
m= 0 (আমরা জানি, m= ±l, যেহেতু l=o তাই m=0)
s= -1/2 (অরবিটালের ২য় ইলেক্ট্রনের জন্য s= -1/2)
অতএব দেখা যাচ্ছে একই পরমাণুর একই অরবিটালে
থাকা সত্ত্বেও ইলেক্ট্রন দুটির ৪ টি কোয়ান্টাম সংখ্যা সমান নয়। যা পলির বর্জন নীতি
কে সমর্থন করে।
আউফবাউ নীতিঃ Aufbau একটি জার্মান
শব্দ যার অর্থ Building up । সহজ বাংলায় বললে, নিচ থেকে তৈরী করতে করতে উপরের দিকে
ওঠা। আউফবাউ নীতি ইলেক্ট্রন বিন্যাসের ক্রম সম্পর্কে ধারণা দেয়। এই নীতি অনুসারে,
“ইলেক্ট্রন সমূহ
নিম্ন শক্তির শক্তিস্তর পূর্ণ করে ক্রমাণুসারে উচ্চ শক্তির শক্তিস্তরে প্রবেশ করে”
অর্থাৎ, ইলেক্ট্রন বিন্যাসের সময় ইলেক্ট্রন
সমুহ আগে নিম্ন শক্তির শক্তিস্তরে প্রবেশ করে এর পর ক্রমাণুসারে উচ্চ শক্তির শক্তিস্তরে
প্রবেশ করে।
শক্তিস্তরের শক্তি নির্ধারন করা হয় এর প্রধান
কোয়ান্টাম সংখ্যা (n) ও সহকারী কোয়ান্টাম
সংখ্যা (l) এর যোগফল দ্বারা। অর্থাৎ, যে অরবিটালের
n+l এর মান বড় ঐ অরবিটালের শক্তি বেশি।
উদাহরণ স্বরূপ 3d ও 4s অরবিটালের কথা বলা
যেতে পারে।
3d অরবিটালের জন্য,
n= 3, l= 2
সুতরাং n+l = 5
4s অরবিটালের জন্য,
n= 4, l= 0
সুতরাং n+l = 4
এখানে 3d অরবিটালের শক্তি 4s অরবইটাল থেকে
বেশি। যদিও বিন্যাস ক্রম হিসেব করলে 3d অরবিটালে আগে ইলেক্ট্রন প্রবেশ করার কথা, কিন্তু 4s অরবিটালের শক্তি 3d থেকে কম হওয়ায় ইলেক্ট্রন আগে 4s অরবিটালে প্রবেশ করে।
হুন্ডের নিয়মঃ হুন্ডের নিয়ম মূলত সমশক্তি সম্পন্ন অরবিটালে ইলেক্ট্রন প্রবেশের ক্রম ও ইলেক্ট্রনের স্পিন সম্পর্কে আলোচনা করে। হুন্ডের নিয়ম টি নিম্নরূপঃ
“ সম শক্তি সম্পন্ন অরবিটালে ইলেক্ট্রন সমূহ এমন ভাবে অবস্থান করে যেন তারা সর্বাধিক সংখ্যায় বিজোড় অবস্থায় থাকতে পারে এবং এই বিজোড় ইলেক্ট্রন গুলোর স্পিন একমূখী হয় ”
ভিন্ন ভাবে বললে,
“ সম শক্তি সম্পন্ন
অরবিটালে প্রথমে এক মুখী ইলেট্রন প্রবেশ করবে,এর পর আরো ইলেট্রন অবশিষ্ট থাকলে তা বিপরীত
মুখী হয়ে প্রবেশ করবে”
Friedrich Hund Image source- Google | Image by- wikipedia |
ব্যাখ্যাঃ আমরা জানি একটি
অরবিটালে সর্বোচ্চ দুটি ইলেট্রন থাকতে পারে,যাদের স্পিন হবে বিপরীত। সমশক্তি সম্পন্ন
অরবিটালে ইলেক্ট্রন বিন্যাসের সময় এক অর্বিটালে দুটি ইলেক্ট্রন প্রবেশ না করে প্রতিটিতে
একটি করে ইলেক্ট্রন প্রবেশ করবে এবং এদের স্পিন একই মুখী হবে। এরপর আরো ইলেক্ট্রন অবশিষ্ট
থাকলে সেগুলো বিপরীত মুখী হয়ে একটি একটি করে ঐ অরবিটাল গুলোতে প্রবেশ করবে।
উদাহরণ স্বরূপ ফসফরাসের ইলেক্ট্রন বিন্যাস
দেখা যাক।
এখানে, 3s অর্বিটাল পূর্ণ করার পর অবশিষ্ট
৩ টি ইলেক্ট্রনের মধ্যে ২ টি 3Px অর্বিটালে এবং অবশিষ্ট ১ টি 3Py অর্বিটালে প্রবেশ
করতে পারতো। কিন্তু বাস্তবে তা হয়না। ইলেক্ট্রন গুলো একটি একটি করে যথাক্রমে 3Px, 3Py, 3Pz অর্বিটালে প্রবেশ করে। এখানে 3Px, 3Py, 3Pz অর্বিটাল গুলোর শক্তি সমান কেননা এরা একই
উপশক্তিস্তর P এর উন্তর্ভুক্ত এবং অরবিটাল ৩টি তে অবস্থিত প্রতিটি ইলেক্ট্রনের স্পিন
একই মুখী।
Post a Comment