কোয়ান্টাম সংখ্যা-Quantum Number
কোয়ান্টাম সংখ্যা-Quantum number
কোন পরমাণুর কক্ষপথে আবর্তনরত একটি ইলেক্ট্রন
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে এর চারটি বিষয় সম্পর্কে জানা আবশ্যক- ইলেক্ট্রন টি কোন
কক্ষপথে আবর্তন করছে, কোন অবিটালে অবস্থান করছে, অরবিটালের আকৃতি কেমন এবং ইলেক্ট্রন
টির নিজ অক্ষের উপর স্পিন কোন দিকে। ইলেক্ট্রন সম্পর্কে এ তথ্যগুলো প্রকাশ করতে যে
সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাদের কে কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। অর্থাৎ,
"কোন ইলেক্ট্রনের কক্ষপথ সংখ্যা, অরবিটাল, অরবিটালের আকৃতি এবং স্পিন বর্ণনা করতে যে সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাদের কে কোয়ান্টাম সংখ্যা বলা হয়।"
অতএব দেখা যাচ্ছে কোয়ান্টাম সংখ্যা মোট ৪ টি। নিচে কোয়ান্টাম সংখ্যা
গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
১.প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ কোন ইলেক্ট্রন পরমাণুর কত তম কক্ষপথে অবর্তন করছে তা প্রকাশ করতে যে সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাকে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। একে n দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমনঃ কোন ইলেক্ট্রন ২য় কক্ষপথে অবস্থান করলে n=2, ইলেক্ট্রন ৩য় কক্ষপথে অবস্থান করলে n=3 ইত্যাদি।
২.সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ কোন ইলেক্ট্রন কক্ষপথের কোন অরবিটাল অবস্থান করছে তা প্রকাশ করতে যে সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। একে l দ্বারা প্রকাশ করা হয়। l এর মান 0 থেকে n-1 পর্যন্ত হয়। অর্থাৎ ১ম কক্ষপথে যখন n=1 তখন l= 0,
২য় কক্ষপথে যখন n=2 তখন l= 0,1,
৩য় কক্ষপথে যখন n=3 তখন l=0,1,2
৪র্থ কক্ষপথে যখন n=4 তখন l=0,1,2,3
উল্লেখ্য যে, l= 0 হলে s অরবিটাল, l= 1 হলে
p অরবিটাল, l= 2 হলে d অরবিটাল এবং l= 3 হলে f অরবিটাল নির্দেশ করে।
একটু ভাল ভাবে খেয়াল করলে দেখা যায়,
১ম কক্ষপথে l= 0, অর্থাৎ ১ম
কক্ষপথে কেবলমাত্র একটি s অরবিটাল রয়েছে।(1s)
২য় কক্ষপথে l= 0,1 অর্থাৎ ২য় কক্ষপথে s ও
p অরবিটাল রয়েছে।(2s, 2p)
৩য় কক্ষপথে l=0,1,2 অর্থাৎ ৩য় কক্ষপথে s,
p ও d অরবিটাল রয়েছে। (3s, 3p, 3d)
৪র্থ কক্ষপথে l=0,1,2,3 অর্থাৎ ৪র্থ কক্ষপথে
s, p,d ও f অরবিটাল রয়েছে। (4s, 4p, 4d, 4f)
Image source-Google |
৩.চুম্বক কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ পরমাণুর ধনাত্মক নিউক্লিয়াস এবং এর কক্ষপথে আবর্তনরত ঋণাত্মক ইলেক্ট্রনের প্রভাবে পরমাণুর অভ্যন্তরে তড়িৎ ক্ষেত্র ও চুম্বক ক্ষেত্র উৎপন্ন হয়। এ চুম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে পরমাণুর অরবিটালের কাঠামোতে ত্রিমাত্রিক দিক বিন্যাস বা ওরিয়েন্টেশন ঘটে। অরবিটালের এই ত্রিমাত্রিক দিক বিন্যাস বর্ণনা করার জন্য যে সংখ্যা ব্যবহার করা হয় তাকে চুম্বক কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। একে m দ্বারা প্রকাশ করা হয়। m এর মান 0, ±l. অর্থাৎ,
l=0 হলে m= 0,
l=1, হলে m= 0, ±1 বা m= -1, 0, +1
l=2, হলে m= 0, ±1,±2 বা m= -2, -1, 0, +1, +2
আমরা জানি l=1 হলে তা p অরবিটাল নির্দেশ
করে।এক্ষেত্রে m এর ৩টি মান পাওয়া যায়। এজন্যই p অর্বিটালের ৩ টি অংশ রয়েছে যথা `p_{z}, p_{y}, p_{z}`
The shape of s and p orbitals Image source-Google | Image by- drawittoknowit.com |
The shape of d orbitals Image source-Google | Image by- classnotes.org.in |
৪.স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যাঃ কোন ইলেক্ট্রন তার নিজ অক্ষের উপর কোন দিকে( ঘড়ির
কাটার দিকে বা ঘড়ির কাটার বিপরীত দিকে) আবর্তন করছে তা বর্ণনা করার জন্য যে সংখ্যা
ব্যবহার করা হয় তাকে স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা বলা হয়। একে s দ্বারা প্রকাশ করা হয়। s
এর মান `+\frac{1}{2}` বা `-\frac{1}{2}`.
আমরা জানি,প্রতিটি অরবিটালে ২টি করে ইলেক্ট্রন
থাকতে পারে। ১ম ইলেক্ট্রনের জন্য s এর মান `+\frac{1}{2}` এবং ২য় ইলেক্ট্রনের জন্য s এর মান `-\frac{1}{2}`.
এখন কার্বনের (C)৩য়, ৪র্থ ও ৫ম ইলেক্ট্রনের
কোয়ান্টাম সংখ্যা নির্ণয় করা যাক।
কার্বনের (C) ইলেক্ট্রন বিন্যাস নিম্নরূপঃ
C(6)`\rightarrow` 1`s^2` 2`s^2` 2`Px^1` 2`Py^1` 2`Pz^0`
এখানে ৩য় ইলেক্ট্রনটি 2s অরবিটালে অবস্থিত। সুতরাং ৩য় ইলেক্ট্রন এর জন্য, n=2, l=0(এখানে l= 0,1। কিন্তু ইলেট্রন টি যেহেতু s অরবিটালে অবস্থিত তাই l=0), m=0, s=`+\frac{1}{2}`
আবার ৪র্থ ইলেক্ট্রনটি 2s অরবিটালে অবস্থিত।
সুতরাং ৩য়
ইলেক্ট্রন এর জন্য, n=2, l=0, m=0, s=`-\frac{1}{2}`(একই অরবিটালে ২য় ইলেট্রনের স্পিন বিপরীত তাই
s= `-\frac{1}{2}`)
এবং, ৫ম ইলেক্ট্রনটি 2P অরবিটালে অবস্থিত।
সুতরাং ৪র্থ
ইলেক্ট্রন এর জন্য, n=2, l=1(এখানে l= 0,1। কিন্তু ইলেট্রন টি যেহেতু P অরবিটালে অবস্থিত
তাই l=1), m=-1, s=`+\frac{1}{2}`.
লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ৩য় এবং ৪র্থ ইলেক্ট্রন
একই অরবিটালে অবস্থিত হলেও এদের ৪টি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান এক নয়। প্রথম ৩টি কোয়ান্টাম
সংখ্যার মান সমান হলেও স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যার মান ভিন্ন।
অর্থাৎ, একই পরমাণুর যেকোন দুই ইলেক্ট্রনের
চারটি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান সমান হতে পারেনা, অন্তত একটি কোয়ান্টাম সংখ্যার মান ভিন্ন
হবেই। একে পলির বর্জন নীতি বলে।
Post a Comment