স্থির তড়িৎ-Static Electricity
স্থির তড়িৎ নিয়ে আলোচনা শুরুর পূর্বে আমাদের জানতে হবে চার্জ কি। সাধারনত কোন বস্তুতে স্বাভাবিকের তুলনায় কম বেশী সংখ্যক ইলেক্ট্রন থাকলে আমরা তাকে চার্জিত বস্তু বলি এবং ঐ বস্তুটি যে সকল বৈশিষ্ট প্রদর্শন করে তাকে চার্জ বলে থাকি। এই একই ঘটনা কিন্তু প্রোটনের সংখ্যরা তারতম্যের জন্য ও দেখা যায়। এখন প্রশ্ন হলো ইলেক্ট্রন বা প্রোটনের সংখ্যার তারতম্যের জন্য কেন পদার্থের মধ্যে এসকল বৈশিষ্ট দেখা যায়? তারমানে চার্জের উৎস ইলেক্ট্রন বা প্রোটন। অতএব আমরা বলতে পারি,
পদার্থ সৃষ্টিকারী মৌলিক কণাসমূহের মৌলিক ও বৈশিষ্ট্যমূলক ধর্মকে আধান বা চার্জ বলে।
কোন বস্তুতে চার্জ সঞ্চিত অবস্থায় বা স্থির অবস্থায় থাকলে তাকে স্থির তড়িৎ বলে। অপর দিকে চার্জ যদি কোন বস্তুর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন তাকে চল তড়িৎ বলে। আজকের লেখায় আমরা স্থির তড়িৎ নিয়ে আলোচনা করবো।
কুলম্বের সূত্রঃ বিজ্ঞানী চার্লস কুলম্ব দুটি ক্ষুদ্র চার্জ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষন করে একটি সূত্র প্রদান করে। যা কুলম্বের সূত্র নামে পরিচিত। কুলম্বের সূত্র টি নিম্নরূপঃ
"নির্দিষ্ট মাধ্যমে দুটি বিন্দু চার্জের মধ্যে ক্রিয়াশীল বল তাদের চার্জের গুনফলের সমানিপাতিক এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যাস্তানুপাতিক।"
![]() |
All rights reserved by- knowledgepediabd.blogspot.com |
ধরা যাক, `q_1` ও `q_2` মানের দুটি বিন্দু চার্জ পরস্পর হতে `r` দূরত্বে অবস্থিত। তাহলে কুলম্বের সূত্রানুসারে আধানদ্বয়ের মধ্যবর্তী ক্রিয়াশীল বল,
`F \propto frac{q_1 q_2}{r^2}`
`\Rightarrow F = C \frac{q_1 q_2}{r^2}`
এখানে `C` সমানুপাতিক ধ্রুবক। একে কুলম্বের ধ্রবক ও বলা হয়।
বায়ু বা শূন্য মাধ্যমে `C = 9 \times 10^9 Nm^{-2}` ধরা হয়। তবে মাধ্যমভেদে এই মানের পরিবর্তন হয়। শূন্য মাধ্যমে `C = \frac{1}{4 \pi \epsilon_o}`
এখানে `\epsilon_o` হলো শূন্য মাধ্যমের ভেদনযোগ্যতা । ভেদনযোগ্যতা বলতে কোন মাধ্যমের ঐ ধর্ম কে বুঝায় যা দ্বারা ঐ মাধ্যমে অবস্থিত কোন চার্জ বা আধানের আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বলের পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ,
" কোন মাধ্যমের যে ধর্মের জন্য দুটি চার্জের মধ্যে ক্রিয়াশীল বলের পরিবর্তন ঘটে তাকে ঐ মাধ্যমের ভেদনযোগ্যতা বলে"
মনে করি শুন্য বা বায়ূ মাধ্যমের ভেদন যোগ্যতা `\epsilon_o` তাহলে কুলম্বের সূত্রের সাহায্যে পাই,
` F = C \frac{q_1 q_2}{r^2}`
`\Rightarrow F = \frac{1}{4 \pi \epsilon_o} \frac{q_1 q_2}{r^2}` ------(1)
`q_1` ও `q_2` আধানদ্বয় কে `\epsilon` ভেদনযোগ্যতা বিশিষ্ট অন্য একটি মাধ্যমে রাখা হলে,
` F' = \frac{1}{4 \pi \epsilon} \frac{q_1 q_2}{r^2}` ------(2)
`(1) \div (2)` হতে পাই,
`\frac{F}{F'} = \frac{\frac{1}{4 \pi \epsilon_o} \frac{q_1 q_2}{r^2}}{\frac{1}{4 \pi \epsilon} \frac{q_1 q_2}{r^2}}`
`\Rightarrow \frac{F}{F'}= \frac{\frac{1}{\epsilon_o}}{\frac{1}{\epsilon}}`
`\Rightarrow \frac{F}{F'} = \frac{\epsilon}{\epsilon_o} = K` ---------(3)
এখানে `K` একটি সমানুপাতিক ধ্রুবক। একে পরাবৈদ্যুতিক ধ্রবক বা তড়িৎ মাধ্যমাঙ্ক বলা হয়।
(3) নং হতে পাই,
`\frac{F}{F'} = K`
অর্থাৎ, শূন্য বা বায়ু মাধ্যমে দুটি আধানের মধ্যে ক্রিয়াশীল বল এবং অন্য যে কোন মাধ্যমে ঐ একই আধানদ্বয়ের মধ্যে ক্রিয়াশীল বলের অনুপাত কে পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক `K` বলে।
আবার,
`\frac{\epsilon}{\epsilon_o} = K`
অর্থাৎ, যে কোন মাধ্যমের ভেদনযোগ্যতা ও শূন্য মাধ্যমের ভেদনযোগ্যতার অনুপাত কে ঐ মাধ্যমের পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবক বলে।
এখন , (3) নং হতে লিখতে পারি,
`\frac{\epsilon}{\epsilon_o} = K` --------(4)
`\epsilon = \epsilon_o K`
`\epsilon` এর মান (2) নং সমীকরনের বসিয়ে পাই,
`F' = \frac{1}{4 \pi \epsilon_o K} \frac{q_1 q_2}{r^2}` ------(5)
কোন মাধ্যমের পরাবৈদ্যুতিক ধ্রুবকের মান জানা থাকলে (5) সমীকরনের সাহায্যে ঐ মাধ্যমে অবস্থিত দুটি আধানের মান নির্ণয় করা সম্ভব।
No comments:
Post a Comment
If you have any questions, feel free to ask here. I will try to answer your questions.